বিদেশে যাওয়ার জন্য অনেকেরই অর্থনৈতিক সহায়তার প্রয়োজন হয়। এই চাহিদা পূরণে বেশ কয়েকটি ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ঋণ প্রদান করে। এই ঋণগুলি বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন “প্রবাসী ঋণ”, “অভিবাসন ঋণ”, “ওয়ার্কার্স ঋণ” ইত্যাদি। এই প্রবন্ধটি থেকে আপনি জানতে পারবেন কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় তার একটি তালিকা।
এই পোস্টে আপনি যা যা জানতে পারবেন:
যে সকল ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে তার নাম
১. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
এটি প্রবাসীদের জন্য নিবেদিত একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। এটি বিভিন্ন ধরণের প্রবাসী ঋণ প্রদান করে, যার মধ্যে রয়েছে:
- অভিবাসন ঋণ
- ব্যবসা ঋণ
- শিক্ষা ঋণ
- গৃহ ঋণ
২. সোনালী ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক “প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ প্রকল্প” নামে একটি ঋণ প্রদান করে।
৩. অগ্রণী ব্যাংক
অগ্রণী ব্যাংক “অভিবাসী শ্রমিক ঋণ প্রকল্প” নামে একটি ঋণ প্রদান করে।
৪. পূবালী ব্যাংক
পূবালী ব্যাংক “প্রবাসী ঋণ প্রকল্প” নামে একটি ঋণ প্রদান করে।
৫. এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক “প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ” নামে একটি ঋণ প্রদান করে।
৬. সোনালী ব্যাংক
এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এবং এটি প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ঋণ প্রদান করে।
৭. জনতা ব্যাংক
এটি বাংলাদেশের আরেকটি বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এবং এটি প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ঋণ প্রদান করে।
এ সকল ব্যাংক ছাড়াও আরো কিছু ব্যাংক আছে যারা প্রবাসী ঋণ দিয়ে থাকতে পারে।
এই ঋণগুলির বৈশিষ্ট্য
- ঋণের পরিমাণ: সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
- সুদের হার: ৯% থেকে ১৪%।
- ঋণের মেয়াদ: ১ থেকে ৩ বছর।
- জামানত: কোন জামানত ছাড়াই ঋণ পাওয়া সম্ভব।
ঋণ বিতরণের শর্ত
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- আবেদনকারীর অবশ্যই একটি বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসা থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়ের প্রমাণ থাকতে হবে।
প্রবাসী ঋণের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া
- ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে ঋণ আবেদনপত্র ডাউনলোড করুন।
- আবেদনপত্র পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ব্যাংকে জমা দিন।
- ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনপত্র যাচাই করবে এবং ঋণ অনুমোদন করবে।
প্রবাসী ঋণের সুবিধা
- বিদেশে যাওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
- ঋণ পরিশোধের মাধ্যমে ক্রেডিট স্কোর তৈরি করা সম্ভব।
- ভবিষ্যতে আরও বড় ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
প্রবাসী ঋণের অসুবিধা
- ঋণের উপর সুদ প্রদান করতে হয়।
- ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ খেলাপী হতে পারে।
- ঋণের জন্য আবেদন করার সময় বেশ কিছু কাগজপত্র জমা
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- পূরণকৃত ঋণ আবেদনপত্র
- সর্বশেষ পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
- টিন সার্টিফিকেটের ফটোকপি
- নোমিনির ছবি ও টিন সার্টিফিকেটের ফটোকপি
- আয়ের প্রমাণ (যেমন: বেতন সার্টিফিকেট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি)
- কর্মসংস্থানের প্রমাণ (যেমন: নিয়োগপত্র, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি)
- ভ্রমণ বীমা
- বিমান টিকিট
কিছু টিপস:
- ঋণের জন্য আবেদন করার আগে বিভিন্ন ব্যাংকের সুদের হার ও ঋণের শর্তাবলী সম্পর্কে জেনে নিন।
- ঋণের পরিমাণ আপনার প্রকৃত চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারণ করুন।
- ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করুন।
- ঋণের কাগজপত্র সাবধানতার সাথে পূরণ করুন এবং সঠিকভাবে জমা দিন।
আরো দেখুন: প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম
উপসংহার
প্রবাসী ঋণ বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণে অনেকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। ঋণের জন্য আবেদন করার আগে সকল তথ্য সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।