প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক (পিকেবি) বাংলাদেশের প্রবাসীদের জন্য একটি বিশেষায়িত ব্যাংক যা তাদের বিভিন্ন আর্থিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করে। ঋণ প্রদান পিকেবি-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা যা প্রবাসীদের বিদেশ যাত্রা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা, গৃহ নির্মাণ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
এই আর্টিকেলে আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের বিভিন্ন ঋণ নিয়মের বিস্তারিত আলোচনা করব।
এই পোস্টে আপনি যা যা জানতে পারবেন:
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের প্রকারভেদ
- অভিবাসন ঋণ
- পুনর্বাসন ঋণ
- কর্মসংস্থান ঋণ
- শিক্ষা ঋণ
- গৃহ ঋণ
- কৃষি ঋণ
- ব্যবসায়িক ঋণ
- স্বল্পমেয়াদী ঋণ
- দীর্ঘমেয়াদী ঋণ
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কত টাকা লোন দেয়
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের সুদের হার
- ঋণের সুদের হার ঋণের ধরণ, ঋণের পরিমাণ, এবং ঋণের মেয়াদ অনুসারে নির্ধারিত হয়।
- সুদের হারঃ ৯% (সরল সুদ)।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের মেয়াদ
- ঋণের মেয়াদ ঋণের ধরণ এবং ঋণের পরিমাণের উপর নির্ভর করে।
- সর্বোচ্চ ঋণের মেয়াদ ১৫ বছর।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের আবেদন প্রক্রিয়া
- ঋণের জন্য আবেদনকারীকে পিকেবি-এর নির্ধারিত আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দিতে হবে।
- আবেদনপত্রের সাথে আবেদনকারীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
- ব্যাংক আবেদনপত্র ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ঋণ অনুমোদন করে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সাধারণত অভিবাসন ও পুনর্বাসন ঋণের জন্য সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে। তবে, এটি নির্ভর করে আবেদনকারীর যোগ্যতা, প্রয়োজন এবং ব্যাংকের শর্তাবলীর উপর। অভিবাসনের ক্ষেত্রে বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ কভার করতে এই ঋণ প্রদান করা হয়। পুনর্বাসন ঋণের ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে ফিরে আসা কর্মীদের কর্মসংস্থানের জন্য এই ঋণ সহায়তা প্রদান করা হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের জামিন
- ঋণের পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে জামিন প্রদান করা বাধ্যতামূলক।
- জামিনদার আবেদনকারীর আত্মীয় বা বন্ধু হতে পারে।
- জামিনদারের আয় ও সম্পত্তির উপর নির্ভর করে ঋণ অনুমোদন করা হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ নিয়ম
- ঋণ পরিশোধ মাসিক কিস্তিতে করতে হয়।
- ঋণের কিস্তি সময়মত পরিশোধ না করলে জরিমানা প্রযোজ্য।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে ঋণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- আবেদনকারীর সর্বশেষ পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- আবেদনকারীর ঠিকানা প্রমাণ (যেমন, বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি বিল)
- আবেদনকারীর আয়ের প্রমাণ (যেমন, বেতন সার্টিফিকেট)
- ঋণের উদ্দেশ্যের প্রমাণ (যেমন, ভিসা, ভর্তি কার্ড, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা)
- জামিনদারের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- জামিনদারের আয়ের প্রমাণ
- জামিনদারের সম্পত্তির দলিল (যদি থাকে)
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণ অনুমোদন
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঋণ আবেদনপত্র ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ঋণ অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করা হয়:
- আবেদনকারীর আয়ের পরিমাণ
- আবেদনকারীর ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা
- ঋণের উদ্দেশ্য
- জামিনের যোগ্যতা
ঋণ বিতরণ
ঋণ অনুমোদন হওয়ার পর ব্যাংক ঋণের টাকা আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবে বিতরণ করে।
আরো জানুন: প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে কি কি লাগে
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের সুবিধা
- সহজ আবেদন প্রক্রিয়া
- দ্রুত ঋণ অনুমোদন
- কম সুদের হার
- দীর্ঘ ঋণের মেয়াদ
- সহজ কিস্তি পরিশোধ
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের অসুবিধা
- জামিন প্রদানের প্রয়োজনীয়তা
- সময়মত কিস্তি পরিশোধ না করলে জরিমানা
- ঋণের উপর বিভিন্ন ফি প্রযোজ্য
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঋণ সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য:
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ওয়েবসাইট: https://pkb.gov.bd/
- মেইল : info@pkb.gov.bd
- টেলিফোন: প্রধান কার্যালয়, হেল্প ডেস্ক: + ৮৮-০২-৪৮৩২২৮৭৩
উপসংহার
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ঋণ প্রদান করে। ঋণের নিয়মাবলী ঋণের ধরণ অনুসারে ভিন্ন হতে পারে। ঋণের জন্য আবেদন করার পূর্বে ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা হেল্পলাইন থেকে ঋণের নিয়মাবলী সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই তথ্য গুলো কেবলমাত্র সাধারণ নির্দেশিকা হিসাবে প্রদান করা হয়েছে।