বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের অনুদান

করোনা মহামারীর সময় বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার কবলে পড়ে বহু প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মহীন হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। বিদেশে অর্জিত সঞ্চয় শেষ হয়ে যাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েন তারা। এ অবস্থায় সরকার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের আর্থিক সহায়তার জন্য বিভিন্ন অনুদান কর্মসূচি গ্রহণ করে।

অনুদানের ধরন ও পরিমাণ:

  • প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক প্রকল্প: এই প্রকল্পের আওতায় করোনাকালে দেশে ফেরত আসা প্রায় ২ লাখ প্রবাসীকে ১৩,৫০০ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। এই অনুদানের উদ্দেশ্য ছিল তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।

  • ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অনুদান: প্রবাসে মৃত্যুবরণকারী কর্মীদের পরিবারকে ৩ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। এছাড়াও মৃতদেহ দেশে আনয়ন, দাফন, সৎকার, বকেয়া পাওনা আদায়, ক্ষতিপূরণ আদায় ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করা হয়।

আবেদনের প্রক্রিয়া:

সাধারণত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে এসব আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। আবেদনকারীকে নির্ধারিত আবেদনপত্র পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিতে হয়।

অনুদানের ইতিবাচক প্রভাব:

এসব আর্থিক অনুদান প্রবাসীদের জন্য একটি বড় সহায়তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই এই অর্থ দিয়ে নিজেদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছেন। কেউ কেউ ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করেছেন, আবার কেউ কেউ এই অর্থ দিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেছেন।

সমালোচনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

অনুদানের পরিমাণ সন্তোষজনক না হওয়া এবং আবেদন প্রক্রিয়া জটিল হওয়ার সমালোচনা রয়েছে। তবে সরকার ভবিষ্যতে প্রবাসীদের জন্য আরও বেশি সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা করছে।

উপসংহার:

বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের আর্থিক অনুদান একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই অনুদানের মাধ্যমে সরকার প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে এই কর্মসূচির সুফল যাতে সঠিকভাবে প্রবাসীদের কাছে পৌঁছায় সেদিকে আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: সর্বশেষ তথ্য এবং অনুদানের যোগ্যতা যাচাই করার জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://wewb.gov.bd/) ভিজিট করুন।

Leave a Comment