কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা

বাংলাদেশের বেকার যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে সরকার কর্মসংস্থান ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। এই ব্যাংকটি বেকার যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখায়। চলুন, কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা:

  • সহজ শর্তে ঋণ: কর্মসংস্থান ব্যাংক বেকার যুবক-যুবতীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে। এসব ঋণের সুদের হার তুলনামূলকভাবে কম এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদও যথেষ্ট।
  • বিভিন্ন ধরনের ঋণ: কর্মসংস্থান ব্যাংক বিভিন্ন খাতে ঋণ প্রদান করে। যেমন: কৃষি, শিল্প, সেবা, ব্যবসা প্রভৃতি। এছাড়াও ব্যাংকটি বিশেষ কিছু প্রকল্পের আওতায় ঋণ প্রদান করে থাকে।
  • জামানতবিহীন ঋণ: কর্মসংস্থান ব্যাংক নির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে জামানত ছাড়াই ঋণ প্রদান করে। এটি অনেকের জন্য আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে।
  • প্রশিক্ষণ সুবিধা: ঋণ গ্রহীতাদের সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা এবং আয় বৃদ্ধির জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।
  • ঋণের পরিমাণ: কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণের পরিমাণ প্রকল্পের ধরন এবং ঋণ গ্রহীতার সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে। সাধারণত ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়।
  • অন্যান্য সুবিধা: ঋণের পাশাপাশি কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ গ্রহীতাদের বিভিন্ন পরামর্শ সেবা প্রদান করে। এছাড়াও ব্যাংকটি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ঋণ গ্রহীতাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেয়।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণ গ্রহণের যোগ্যতা:

  • বেকার যুবক-যুবতী: কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণ গ্রহণের প্রাথমিক যোগ্যতা হলো বেকার হওয়া।
  • বয়স: ঋণ গ্রহীতার বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: ঋণের ধরন এবং পরিমাণের উপর নির্ভর করে শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়।
  • আয়ের উৎস: ঋণ গ্রহণের সময় আয়ের কোনো উৎস না থাকলেও চলবে। তবে ঋণের টাকা দিয়ে যে আয় করা হবে, তা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণের আবেদন প্রক্রিয়া:

  • আবেদন ফরম সংগ্রহ: কর্মসংস্থান ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে ঋণের আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
  • আবেদন ফরম পূরণ: আবেদন ফরমে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা: আবেদন ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। যেমন: জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, প্রশিক্ষণ সনদ (যদি থাকে), ব্যবসা পরিকল্পনা প্রভৃতি।
  • ঋণের অনুমোদন: ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্র এবং কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ঋণ অনুমোদন করে।

শেষ কথা:

কর্মসংস্থান ব্যাংক বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ব্যাংকটির সহজ শর্তে ঋণ, প্রশিক্ষণ সুবিধা এবং অন্যান্য সহযোগিতা বেকার যুবক-যুবতীদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ সুগম করেছে। তাই যারা বেকার এবং আত্মকর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছেন, তাদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঋণ একটি আশীর্বাদ হতে পারে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ:

আপনি যদি KEB-এর সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হন বা ব্যাংকের সেবাগুলির জন্য আবেদন করতে চান তবে আপনি নিম্নলিখিত উপায়ে KEB-এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন:

  • ওয়েবসাইট: আপনি KEB-এর ওয়েবসাইট https://kb.gov.bd/ পরিদর্শন করতে পারেন। ওয়েবসাইটে ব্যাংকের সেবা, ঋণের সুযোগ, প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম এবং আরও অনেক কিছু সম্পর্কে তথ্য রয়েছে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই লেখাটি সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে এবং এটি কোনো পেশাদার আইনি বা আর্থিক পরামর্শ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দয়া করে যোগ্য পেশাদার ব্যক্তির সাথে পরামর্শ করুন।

Leave a Comment