আজকের বিশ্বে, জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা আমাদের গ্রহের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ু দূষণ এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ক্রমবর্ধমান দামের মতো সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব শক্তির উৎসগুলির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে, অপ্রচলিত শক্তির ধারণাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই পোস্টে আপনি যা যা জানতে পারবেন:
অপ্রচলিত শক্তি কাকে বলে?
ঐতিহ্যবাহী জীবাশ্ম জ্বালানি (যেমন কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস) ব্যতীত যেকোনো শক্তির উৎসকে অপ্রচলিত শক্তি বলা হয়। এই শক্তির উৎসগুলি নবায়নযোগ্য, অর্থাৎ সেগুলি প্রাকৃতিকভাবে পুনরুৎপাদিত হয় এবং কখনো শেষ হবে না।
অপ্রচলিত শক্তির উৎসের উদাহরণ:
- সৌর শক্তি: সূর্য থেকে আসা আলো ও তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করা।
- বায়ু শক্তি: বাতাসের গতি শক্তিতে রূপান্তরিত করা।
- জলবিদ্যুৎ: জলপ্রপাতের পতনের শক্তি বা নদীর প্রবাহ শক্তিতে রূপান্তরিত করা।
- জৈব জ্বালানি: উদ্ভিদ ও প্রাণীর জৈব পদার্থ থেকে শক্তি উৎপাদন।
- ভূ-তাপীয় শক্তি: পৃথিবীর ভেতরের তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করা।
- সমুদ্র তরঙ্গ শক্তি: সমুদ্রের তরঙ্গের গতি শক্তিতে রূপান্তরিত করা।
অপ্রচলিত শক্তির সুবিধা:
- পরিবেশবান্ধব: অপ্রচলিত শক্তি উৎপাদনের সময় কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয় না, ফলে এটি পরিবেশবান্ধব।
- নবায়নযোগ্য: সূর্যের আলো, বায়ু, পানির প্রবাহ কখনো ফুরিয়ে যায় না। তাই অপ্রচলিত শক্তির উৎস নবায়নযোগ্য।
- টেকসই উন্নয়ন: অপ্রচলিত শক্তি টেকসই উন্নয়নে সহায়ক। এটি জ্বালানি আমদানির উপর নির্ভরতা কমায় এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে।
- গ্রামীণ উন্নয়ন: সৌরশক্তি ও জৈব শক্তির মতো অপ্রচলিত শক্তি দিয়ে গ্রামীণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়, যা গ্রামীণ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অপ্রচলিত শক্তির অসুবিধা:
- উচ্চ প্রাথমিক বিনিয়োগ: অপ্রচলিত শক্তি প্রযুক্তি স্থাপনে প্রাথমিক বিনিয়োগ বেশি।
- প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: কিছু অপ্রচলিত শক্তি প্রযুক্তি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং এর উৎপাদন খরচ অনেক সময় বেশি।
- নির্ভরযোগ্যতা: সৌরশক্তি ও বায়ু শক্তির মতো অপ্রচলিত শক্তির উৎপাদন আবহাওয়ার উপর নির্ভরশীল।
- জমি ব্যবহার: সৌর প্যানেল ও বায়ু টারবাইন স্থাপনের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন হয়।
উপসংহার:
অপ্রচলিত শক্তি ভবিষ্যতের জ্বালানি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর পরিবেশবান্ধব এবং নবায়নযোগ্য বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলাদেশের মতো দেশে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করে জ্বালানি খাতে স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব।